Location, Panthapath, Dhaka-1205.
+8801755913947
Zsha3779@gmail.co

ভালোবাসার ভিন্ন বাসা

Ziauddin Sha's Blog Site

ভালোবাসার ভিন্ন বাসা

Image

মো. জিয়াউদ্দিন শাহ, জেদ্দা (সৌদি আরব) থেকে

আপডেট: ১১ মে ২০১৯, ১৮: ০২ 

ভালোবাসায় আছে দুঃখ। আছে চোখের জল। জলের মূল্য খুঁজে পেতে চেয়েছি, পাইনি। এ জলের মূল্য হয় না, কিছুতেই না। ব্যাপারটাই মূল্য দিয়ে ঘোষণা করার মতো না। তোমার পুরো পৃথিবী বিক্রি করলেও আমার এক ফোঁটা জলের মূল্য হবে না, হতে পারে না। একী? শুরুতেই এত কঠিন কথা কেন? কঠিন নয়, বলো পতন ঘটেছে! আমি এক টুকরো কাগজ চিবোচ্ছিলাম। কাগজে লেখা ছিল ‘মিষ্টি’। চিবোতেই আছি…। কিন্তু কই? সামান্য মিষ্টিও তো বের হলো না। বরং রুচিহীন লাগছে। সমস্যার প্রতিকার খুঁজে বের করতে পারিনি, করতেও হয়নি। কারণ, পুরো ব্যাপারটাই ছিল ঘোর!

ঘোর কেটে গেলে বুঝতে পারলাম, কাগজে লেখা মিষ্টি প্রকৃত মিষ্টি নয়। স্বাদযুক্ত মিষ্টি সামান্য মুখে নিলেইবা কী, মিষ্টি বলার অপেক্ষা রাখে না। আমি তোমায় ভালোবাসি ঘোরে, প্রকৃত দৃষ্টির মতভেদ নিরঙ্কুশ। সস্তায় কুড়ানো বস্তায় বন্দী ভালোবাসা যা পেয়েছি, ঘোরের মোহে পড়ে শুধুই কেঁদেছি। বিরহের মূল্যে যা নিয়েছি, বিচারহীনতায় তা মেলেনি, পাইনি। আমি বিনা মূল্যেই কেনা। মূল্য দেওয়া যেতে পারে, ফুরাতে পারে না। আমাকে মূল্য দিয়ে তুলনা করা বোকামি! কাউকেই মূল্য দিয়ে কেনা যায় না, সম্ভব না।

ঘোরই যদি সুখ, সকল সুখই সেখানে ব্যর্থ। ঘোরে সুখ থাকে না, থাকে হতাশা! হতাশা এনে দেয় ধ্বংস। আত্মপ্রেমী খুঁজে বের করেছে, মনুষ্য প্রাণের বিচরণ শূন্যের ওপর। মানুষ শূন্যলোকে বাস করেও ঘোরের বশে একে ছুঁতে চায়। অথচ শূন্যলোক নিজেই মানুষের সেবায় উদার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক খুঁজেছি, ঘুরে-ফিরে বহুত কেঁদেছি। এত তালাশ করলাম, প্রাণবন্ধুর খবর কেউ দেয়নি, দিতে পারেনি। ভরসার পানেই বেঁচে থাকি, যা অন্যের তৈরি। আমরা ভরসার প্রতিফলন। ভরসা সর্বকালের, সর্বত্রগামী, কারোরই একা না। তুমি অন্যের…শুধুই অনন্যা, আমি অনন্য। দুজনকেই খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কেউ আবার গুণের সাধ্যে দৈবাৎ খুঁজে নেয়, নিতে পারে, রহস্য উন্মোচন থাকে অজানা। আমরা আপনার তরেই মিশে থাকি, যার অপর নাম জীবন। জীবনের রূপ নেই, আছে কাল। কালক্রমে গড়ে ওঠে ভালোবাসা।

পাখি আমার একলা পাখি, ভালোবাসার অচিন পাখি। অচিন ঘরে অচিন বাসা। রূপহীন কালের পাখি ভালোবাসার কল্যাণে রূপান্তর। আমি রূপান্তর, তুমি রূপান্তরিত। রূপ ভালোবাসার উত্তম প্রতীক। প্রতীকের ব্যাকআপে থাকে কর্মের ফল। যার মূল্য যত বেশি, তার পতনও তত বেশি। মানুষ উত্তম, সেরা। অধঃপতন বেছে নিলে পশুকেও হার মানায়, ঘটে ঋণখেলাপি। খেলাপি বিকৃত, স্থান হয় শূন্যেরও নিচে। মানুষ শূন্যের চেয়েও শূন্য। আপনারে চেনো, নিজেকেই ভালোবাসো। শূন্য থেকেই মূল্যের সূচনা, হয় কর্মের সাধনা। আপনার লয় যা শেখায়, জ্বলে–পুড়ে মরার অন্তঃস্থ ভালোবাসায় তা অমর হয়।

ভালোবাসায় থাকে মায়ার জল। মনঃস্তাপে ঘটে অশ্রুক্ষরণ। যে অশ্রুবিন্দু পৃথিবীর সব সমুদ্রের জলকে হার মানায়, সেই দুটি চোখই তোমার। তোমার তত্ত্বে সপ্ত আকাশ-জমিনের সকল স্তর বিরাজিত। তুমি মূল্যে অফুরন্ত, কখনই কেনা যায় না। তবে কি তুমি বিনা মূল্যে কেনা? কেনইবা নয়। তোমার আছে অভিমান, বড্ড অভিমানিনী। কে জানে এর রহস্য! হয়তো এত বেশি অভিমানই তোমাকে নারীতে ভূষিত করেছে। আমি নিজ চিন্তার প্রতিবাহক, নিজেকেই তালাশ করি, দিই তল্লাশি বাণী। তুমি শান্তির বাহিকা হয়েও আমাকে জ্বালাও–পোড়াও। আমি সয়ে বেড়াই যন্ত্রণা! তোমাকে জ্বালাতে–পোড়াতে গেলে বুঝে নিই অকারণ। অকারণ অভিমানে তত জোর নেই, থাকে না। আমার কোনো অভিমানই তোমাকে ফিরিয়ে আনে না, আনতে পারে না। না আনার কারণে হই নিঃসঙ্গ, খুঁজি নিরঞ্জন। তিনিই সর্বাত্মক।

সর্বাত্মকের ধার্যকরণ নীতি খুবই সহজ। তোমাকে ধার্যকরণের মর্জিতে নিতে চাইলে কেউ ঠেকাতে পারে না। কিন্তু আমি এমন করে নিই না, নিতে চাই না। আমি স্বাধীনতাপ্রেমী। অবশ্যই দেখতে চাই, তোমার ব্যক্তিস্বাধীন প্রেরণার আশ্রয়ে আমার স্থান কোথায়। আমি বিনা মূল্যে কেনা বলেই প্রকৃতির মনোরঞ্জন ব্যতীত নিজেকে সঁপে দিই না, দিতে পারি না। এত ভালোবাসি, এত যত্ন করি! হিসাবখাতায় মেলে শূন্য। ভালোবাসা এক শূন্যের ওপর বাসা, ভিন্ন বাসা। তুমি সর্বগুণের মাধুরী, গুণান্বিতা। আমি সর্বগুণের কল্যাণ চাই, চিরকল্যাণ। ব্যাকুল হলে কি আর এত সব গুণের স্পর্শ নেওয়া যায়। তুমি বুঝতে না চাইলে তোমাকে বোঝানোর ক্ষমতা কেউ রাখে না। তোমার বিনাশের পথও আছে খোলা। সেই পথে চাইলেই চলতে পারো।

তুমি ভিন্ন, আমি ভিন্ন, ভিন্ন মোদের বাসা। ভিন্ন সুরেই ডাকি। ভিন্ন ভুবনের ভিন্ন রূপে সাজাই, মায়াভরা পছন্দের রঙে আঁকি। প্রেয়সীও জানে, ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে গ্রহণ উত্তম। তবু যায় ছেড়ে, নেয় ছেড়ে যাওয়ার সান্ত্বনা। আমার সর্বশেষ অভিমানের জোর ঢের কম নয়। একবার সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারলেই হলো। তুমি তখন ঐশ্বরিয়া রায় কিংবা বিশ্ব সুন্দরী হলেও আমি ফিরে আসি না, আসতে পারি না। আমি বেহুদা প্রকৃতির মনোরঞ্জন পথকে বিসর্জন দিই না, দিতে পারি না। আমি জানি, আজিকার তরে যা কিছু আমার, কালের ঘূর্ণিপাকে এর সবই একদিন অন্যের।

ছবি: প্রথম আলো
ছবি: প্রথম আলো

আমি রূপে পাগল, রূপের দেওয়ানা। রূপেই মজেছি। যেই রূপে মজেছি, তুমি সেই রূপের প্রতি নিস্পৃহ! ওই পাগল করা রূপের বাহার আমাকে ঘরে থাকতে দেয় না, থাকতে পারি না। কিছুতেই না। আমি ওই রূপের সৌন্দর্যে দিশেহারা, আত্মভোলা হয়ে গেছি। হৃদয়ে লেগেছে দাগা। বোঝাতে পারি না কিছুই! আমার অন্তর ওই রূপের দহনে অনবরত জ্বলছে, শত চাইলেও এখন নেভাতে পারি না। সামান্য দেখাতেই শান্ত হতাম। শুধু একনজর দেখার অপেক্ষায় ওই পথের চিরতর পথিক। অবিরাম চলি, চলছি…। এই চলার নেই শেষ, নেই সীমা…।

সম্পর্কের বেড়াজাল ভালোবাসা শেখায়। শেখায় ইচ্ছা, কামনা, সাধনা ও বাসনা। ভালোবাসি দাবি কাউকে আপন করে না, করতে পারে না। আপনার লয়েই মিশে থাকে ভালোবাসা। যদি তুমি আমার হও, সময়কেই সঙ্গ দাও। আমি সময় অন্তরালেই তোমার পাশে এসেছি, এসে দেখি তুমিও অন্তরালের বাসিন্দা। আমি কেউ না, তুমিও কারও না। তোমার আমার যথেষ্ট মিল আছে। সবচেয়ে বড় মিল, কেউ কারও না। তাহলে ভালোবাসি দাবির কী হলো? তুমি কী করে আমার, আমিইবা কার? মূল্য দেওয়া যেতে পারে, ফুরাতে পারে না। মানুষের চিরতর বাসনাও ফুরায় না।

ভালোবাসা মরে না, মরতে পারে না। আমার আমরণ ভালোবাসার সারা অঙ্গে কেবলই ব্যথা! ব্যথা নিবারণে আসে ঘুম। ঘুমে যায় বেলা। আমার ফসল বপনের কী হলো? জমি কী খরায় শুকাল, নাকি পানিতে ভাসিল? আমার ঘোরই কাটেনি! জমি পানিতে ভাসেনি, জমির ওপর পানি ভেসেছে। ভালোবাসলে সবই উল্টাপাল্টা হয়ে যায়। ‘আমার হয়েছে কোনটা জানে না এই মনটা’। ভালোবাসা সত্য, স্নেহ, মায়া ও মমতায় গড়েও বৈরাগী। কখনো হয় কুলনাশী। আমিও কুলহীন, নেই কোনো বাসা। বাসা হয় স্থির সীমানার, যার আছে বন্দন। ভালোবাসা বদ্ধ ঘরে টেকেই না। কিছুতেই টেকানো যায় না। ভালোবাসা টিকে থাকে প্রতি নিশ্বাসের আসা–যাওয়ায়।

সম্পর্ক ভালোবাসাকে ক্ষণিক সঙ্গ দেয়। সেখানেও বিরাজে শত ব্যর্থতা ও তিক্ততা, যা কোনো দিনই অমর হয় না! অমরত্বের ভালোবাসা বিরল। ইতিহাস তা–ই সাক্ষী দেয়। ভালোবেসে শুধু কেঁদে গেলাম, কারোরই হলাম না! জীবনভর কেঁদেও পরান বন্ধুর দেখা মেলেনি, পাইনি। অমরত্ব গুণে ভালোবাসার পথ দূরে, বহুদূরে…। কত দূরে জানি না! আজও পাইনি, সাড়া দেয়নি; যেখানে ভালোবাসার মানে ছিল সার্থক। রূপান্তরিত এই বহুরূপী ভালোবাসা বারবার কাঁদায়। আমি কেঁদে কেঁদেই সুখ নিই, নিতে চাই। কিন্তু ভালোবেসে সুখী হয় কজনা? আমারও তা হলো না। হতে পারে ভালোবাসতেই জানি না! না জানার বেদনার্ত সুরই হৃদয়ের গহিনে বাজে—‘না, নাগো না! আমি ভালোবাসতে জানি না…।’

3 Responses

  1. Tombofpep says:

    stromectol pill for lice Warum Ist Levitra So Teuer

  2. VJzGfZABO says:

    cialis generic cost Cardiovascular diseases CVDs are the world s leading cause of death

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *