নিজে কানা পথ চিনি না
অলংকরণ: মাসুক হেলাল
মো. জিয়াউদ্দিন শাহ, জেদ্দা (সৌদি আরব) থেকে
আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৬: ৩৯
মানুষ দেখেশুনে হাটবাজারে ইচ্ছেমতো বেচাকেনা করছেন। নিজের খুশিতে পথেঘাটে সুন্দরতর হাঁটছেন। ফকির লালন বলছেন, ‘ভেদ বিধির পর শাস্ত্র কানা আরেক কানা মন আমার, এই সব দেখি কানার হাটবাজার…।’ কোনো দিন স্কুলে যাননি, লিখতেও পারতেন না। বসন্তগুটিতে একটি চোখও হারিয়ে ছিলেন। কথায় কথায় গান ধরতেন। মানুষকে শ্রেণি-বিন্যাসে কানা সম্বোধন দিয়ে নিজের মনকেও কানা সাজিয়েছেন। মন আবার কানা হয় কী করে? নাকি মনই জন্মের মতো কানা হয়! এই ফকিরের সমস্যা কোথায়? সবাই কানা হতে যাবেন কেন? কানা বলার রহস্যই বা কী? রহস্য যাই হোক। কানা আজ আর নিজস্ব গণ্ডিতে নেই, বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছেন। তাঁর কিছু অনুরাগী কথাগুলো লিখে রেখেছেন। আমরা পেয়েছি লালনগীতি। কর্তৃপক্ষও সেগুলো আমলে নিয়ে লালন একাডেমি গড়ে তুলেছেন। বিশ্ব সাহিত্যের গুণীজনেরা কথাগুলোর তত্ত্ব-রহস্য গবেষণা করছেন।
বিজ্ঞান অজানাকে জানতে মনে করি XY ধরে সফলতা পেয়েছেন। XY-এর মান বের করে বিশ্বকে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি এর জয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। আমি অসহায় আবেগের তালে মনে করলাম ‘মাথা’! মাথায় ঘোরে শুধু টাকা! ধরি আমার আছে ১০০ কোটি টাকা। টাকা পেয়ে বুনলাম ২০০ কোটির প্রজেক্ট। খোদায় কয়, দিলাম ১০০ তোর লাগল ২০০! তোর এখন আরও ১০০ কোটি ঘাটতি! আমি খোদায় তোর তৃপ্তি মেটাতে পারলাম না, আর পারে কে? তুই অকৃতজ্ঞ, যতই পাস ততই চাস! ক্ষুধাতুর মানুষ যন্ত্রণায় ছটফট করছেন, দৈবের প্রতিকারে কাঁদছেন ও প্রার্থনা করছেন। তোর উচিত অন্তঃ দৃষ্টিতে সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়া। তুই ভেবে-চিন্তা কিছুই দেখস না! ফকির লালন শুধু কানা ডাকছে। তুই আসলে কানার ঘরে কানা। আমার বোধে হয় মনে করি ‘মাথা’ ফর্মুলা XY-এর মতো কাজ করেছে। ফকির লালন যদি মন কানা বলতে এমন মনে করে থাকেন, প্রমাণ করেছেন যে, নিজে কানা পথ চিনি না।
কানায় কানায় মামাতো ভাইবোন। এক কানা কয় আরেক কানারে, ‘সখী তুমি কোন বাগানের ফুল?’ চতুর কানা ডেকে বলেন, ‘সব সখীরে পার করিতে নেব আনা আনা, তোমার বেলায় নেব সখী তোমার কানের সোনা।’ সখী কষাকষি শেষে সোনা দিতে রাজি হয়েছেন, মাঝি হয়েছেন উল্লসিত! মাঝি সোনা পেয়ে যাচাই-বাছাই না চালিয়ে নকল হাটেই আসল সোনা বেচতে শুরু করেছেন। সোনা দিয়ে কিনছেন শুধু ছাই! মাঝির ছিল হিরা, সখী হিরা চাননি কানা মাঝিও দেখেননি। মূল্য গেছে বিফলে! মাঝি সখীরে নৌকায় তুলে বইঠা ধরলে ঢেউয়ের আঘাত এনেছিল সর্বনাশ! যদিও সখীকে সোনার বিনিময়ে ওপারে নেওয়ার কথা ছিল। ঝড়ের কবলে তরিসহ ডুবে গেছে। সুযোগে লালন কানা শিক্ষা নিয়ে গান ধরেছেন, ‘আমি অপার হয়ে বসে আছি ওহে দয়াময়, পারে লয়ে যাও আমায়…।’
ভবঘুরে কানা বললেন, সখীর সনে পিরিত কইরা আমার পরান ভরে নাই। ভাবের কানা ডেকে বলেন, মালিক বিনে গতি নাই। অন্ধ কানা স্বপ্নে দেখছেন, মোড়ল ছাড়া উপায় নাই! প্রজা কানা উঠে বললেন, অন্ধের কোনো স্বপ্ন নাই! জনগণ দাবি করেন, ভালো মানের গবেষণা চাই। আমি উত্তরণ চাহি, সখী কেবল ডুবোতে রাজি। আসলে হইনি কাজের কাজী অযথা শুধু ধরি বাজি! মনিব যদি ধরেন কষি নিঃসন্দেহে দোষের ভাগি।
আরেক কানা মন আন্দাজি গান গায়, বলেও মেলা! সখীতো একবারও জিজ্ঞাসিল না, এই অবুঝ মনটা কী চায়! সখীর মনে অনেক ভয়! সে জানে না, জনম দুঃখী কাঙালের তাকে ছাড়াও কেউ আছে। কাঙাল যার-তার সঙ্গে যান না। সাধক আগেই দীনবন্ধুর আদালতে নালিশ করে রেখেছেন, ‘তোমায় আবার যেন দেখলে চিনি পাইয়া যেন না হারাই, আবার যেন আমি তোমার দেখা পাই’। নিতাই কাউকেই ফেলে যান না। কাঙাল-কাঙালিনির মনের আকুতি তবুও ফুরায় না।
এমন প্রেম হইল না চোখের জ্বলও কথা কইল না। সখীর মনে লইল না গাঁথানো মালাও পড়াইল না! অভাগার খবর নিল না, পিরিতির ঘরও বান্ধিল না। এ বেলা আর ঘরের খবর নেওয়া হলো না! হেরে গিয়ে জিতিয়ে দিলাম। নিলাম পথ পানে চেয়ে থাকা…! সঙ্গে ধরে বসেছে হাইপারটেনশন। ‘চেয়ে দেখি সব বিদেশি দেশের দেশি কেহ নাই’। আমি কানা আবার চেয়ে দেখলাম কেমনে? সবই বুঝের ভুল! দেখতে না পেলেও বলা যায়, মিলন হবে কত কালে আমার মনের মানুষেরই সনে…।
8 Responses
[url=http://lasixg.online/]furosemide\purchase[/url]
[url=http://zoloft.science/]buy zoloft generic online[/url]
[url=http://trazodone.best/]trazodone canada[/url]
[url=http://clomid.digital/]clomid 100mg price[/url]
[url=http://zoloft.cyou/]cost of zoloft[/url]
[url=https://accutane.guru/]accutane india[/url]
[url=http://semaglutide.quest/]buy rybelsus[/url]
[url=https://rybelsus.best/]ozempic tab 7mg[/url]